হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের ব্যাংক হিসেবে গত এক বছরে ৬ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এতিমদের সহায়তায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সূত্র থেকে আসা কোটি কোটি টাকা নিজেদের বাড়ি গাড়ি কেনা ছাড়াও রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ পূরণে ব্যবহার করছেন মামুনুল হকসহ হেফাজতের শীর্ষ নেতারা।
রোববার (৩০ মে) বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মাহবুব আলম নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, হেফাজতের অর্থ সম্পাদক মনির হোসেন কাশেমীকে গ্রেপ্তারের পর তদন্তে দেখা যায়, এ সংগঠনে যে অর্থায়ন আসে, তার একটি বড় অংশ আসে বিদেশ থেকে। মূলত রোহিঙ্গা, মাদ্রাসা, এতিমদের জন্য আসে। তাছাড়া কিছু টাকা আসে যা শুধু হেফাজতের দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য।
তবে এই টাকাগুলো তাদের হিসেবে সঠিকভাবে রাখা হয় না। হিসেবে আমরা স্বচ্ছতা পাইনি। ক্ষেত্র বিশেষে দেখা যায়, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা হেফাজতের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ওই টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে।
যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, মামুনুল হকের ব্যাংক হিসেবে গত এক বছরে ৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, আরও বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট আমরা পেয়েছি। আমরা গভীরভাবে মামলাগুলো তদন্ত ও পর্যবেক্ষণ করছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আলম বলেন, ২০১৩ সালের ১৪টি মামলা আমরা তদন্ত করছি। এছাড়াও নতুন বেশ কয়েকটি মামলা আমরা পেয়েছি। অন্য গোয়েন্দা বাহিনীও এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে। খুব দ্রুতই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা হবে হবে।
উল্লেখ্য, নারী উন্নয়ন নীতি ও শিক্ষা নীতির বিরোধিতা করে ২০১০ সালে গড়ে উঠেছিল কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। তবে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গণজাগরণ আন্দোলনের পাল্টায় আট বছর আগে রাজপথে নেমে সংগঠনটি বেশি পরিচিতি পায়।
শাহবাগের আন্দোলনের বিপরীতে ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে সমাবেশ ডেকে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় সংগঠনটি। পরে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের মতিঝিল থেকে সরাতে হয়। ওই ঘটনায় কেবল ঢাকাতেই ৫৩টি মামলা হয়েছিল সে সময়। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন থানায় হয়েছিল আরও অন্তত ৩০টি মামলা।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।